1. [email protected] : anjuman : anjuman
  2. [email protected] : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক
  3. [email protected] : শেয়ারবার্তা : nayan শেয়ারবার্তা
বহুমুখী সংকটে ডুবছে বিডি ওয়েল্ডিং
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:১৫ পিএম

বহুমুখী সংকটে ডুবছে বিডি ওয়েল্ডিং

  • আপডেট সময় : মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৯
BD-welding

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিতর্কিত কোম্পানি বিডি ওয়েল্ডিং বহুমুখী সংকটে ডুবছে। ২০১৭ সালে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার অদূরে ধামরাইয়ে কারখানা স্থানান্তরের পর কোম্পানিটির চাকা আর ঘোরেনি। কারখানার উৎপাদনের সঙ্গেই থমকে গেছে ঘুরে দাঁড়ানোর উদ্যোগ। কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও চাকরি ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন।

রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান আইসিবির ওপর এখন বিডি ওয়েল্ডিংয়ের ঘুরে দাঁড়ানো নির্ভর করছে। প্রায় এক-চতুর্থাংশ শেয়ারধারী আইসিবি এরই মধ্যে কোম্পানিটি চালু করতে বেসরকারি খাতের আলিফ গ্রুপের সঙ্গে চুক্তি করেছে। কিন্তু সেই উদ্যোগটিও হালে পানি পাচ্ছে না। যে কারণে বিডি ওয়েল্ডিংয়ের পাওনাদার ও বিনিয়োগকারীদের সামনে দৃশ্যত কোনো সুখবর নেই।

জানা গেছে, পুঁজিবাজারের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের কোম্পানি বিডি ওয়েল্ডিং তিন বছর ধরে খারাপ সময় পার করছে। ২০১৫ সালে বন্যায় ক্ষতির মুখে পড়ে ঋণের ভারে ন্যুব্জ কোম্পানিটি। এরপর কারখানার জমি চট্টগ্রামের প্রভাবশালী শিল্পগ্রুপ বিএসআরএমের কাছে বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হয়। এর জের ধরে বন্ধকি জমি বিক্রি করে পাওনা আদায় করে সাউথইস্ট ব্যাংক। এরপর কোম্পানির কারখানা চট্টগ্রাম থেকে রাজধানীর অদূরে ধামরাইয়ে কারখানা স্থানান্তরের ঘোষণা দেওয়া হয়। কিন্তু চলতি মূলধন সংকট, মালিকানা হস্তান্তর, জালিয়াতির অভিযোগে মামলা ও বকেয়া ব্যাংকঋণসহ বেশকিছু কারণে লোকসানি ওই কোম্পানিটির উৎপাদন আর চালু হয়নি।

এদিকে উৎপাদন বন্ধ ও জটিলতার কারণে বিডি ওয়েল্ডিংয়ের ঘুরে দাঁড়ানো এখনও অনিশ্চিত। যে কারণে কোম্পানিটির কোম্পানি সচিব সুমন চন্দ্র দেবনাথসহ পদস্থ কর্মকর্তারা এরই মধ্যে চাকরি ছেড়ে চলে গেছেন। আর কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসএম নূরুল ইসলামও লাপাত্তা। মিরপুর-১ নম্বরে মুক্তবাংলা শপিং কমপ্লেক্সে অফিসের কথা বলা হলেও সেটিও কয়েক বছর ধরে বন্ধ। অফিসের টেলিফোন নম্বরগুলোও আপাতত সংযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে। ধামরাইয়ের শ্রীরামপুরের কারখানাও উৎপাদন উপযোগী অবস্থায় নেই। তাই বর্তমান ব্যবস্থাপনায় বিডি ওয়েল্ডিংয়ের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক।

বিডি ওয়েল্ডিংয়ের প্রায় এক কোটি আট লাখ শেয়ার কিনে বিপাকে পড়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি), যা কোম্পানিটির মোট শেয়ারের এক-চতুর্থাংশ। বাধ্য হয়ে বেসরকারি আলিফ গ্রুপের কাছে ওই শেয়ার বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে আইসিবি। গত আগস্টে আলিফ গ্রুপের সঙ্গে আইসিবির চুক্তিও হয়েছে। তবে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অনুমতি না মেলায় আজ পর্যন্ত ওই শেয়ার হস্তান্তর হয়নি। এখন আলিফ গ্রুপ ওই শেয়ার কিনে যদি কোম্পানিটির আধুনিকায়নের পর নতুন করে চালানোর উদ্যোগ নেয়, তবেই বিডি ওয়েল্ডিংয়ের দিন বদলাতে পারে। বর্তমান উদ্যোক্তারাও এখন আইসিবি-আলিফ গ্রুপের মুখ চেয়ে আছেন।

ডুবতে বসা কোম্পানিটির বর্তমান অবস্থা নিয়ে কথা বলার জন্য ওয়েবসাইটে দেওয়া মিরপুর-১ নম্বরের প্রধান কার্যালয়ের ঠিকানায় কয়েক দফায় গিয়ে সেখানে বিডি ওয়েল্ডিংয়ের কাউকে পাওয়া যায়নি। অফিস বন্ধ পাওয়া গেছে। ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসএম নূরুল ইসলামের ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে। সেই সঙ্গে কারখানা-অফিসের ফোন নম্বরগুলোও বন্ধ পাওয়া গেছে।

কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের স্ত্রী ও মার্কেটিং ডিরেক্টর ঝর্ণা ইয়াসমিন বলেন, ‘কয়েক বছর উৎপাদন বন্ধ। তাই কোনো কাজকর্ম নেই। ধামরাইয়ে জিনিসপত্র আনা হলেও উৎপাদন চালু করা সম্ভব হয়নি। এখন কারখানা চালু করা না করা আইসিবির ওপর নির্ভর করছে। তারা আলিফ গ্রুপের সঙ্গে চুক্তি করেছে। কিন্তু এরপর আর কোনো অগ্রগতির খবর পাইনি।’

উল্লেখ্য, ১৯৬৯ সালে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে পথচলা শুরু করে বাংলাদেশ ওয়েল্ডিং ইলেকট্রোডস কোম্পানি (বিডি ওয়েল্ডিং)। ১৯৮৩ সালে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের হাতে কোম্পানিটি ছেড়ে দেওয়া হয়। অনিয়ম-জালিয়াতি, মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্বসহ বেশকিছু কারণে অধিগ্রহণের তিন দশকের মধ্যেই লোকসানি ও ঋণগ্রস্ত কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে বিডি ওয়েল্ডিং। ২০১৫ সালের পর সংকট আরও বেড়ে ডুবতে বসেছে কোম্পানিটি। তারপরও গুজব-গুঞ্জনের ওপর ভর করে কোম্পানিটির শেয়ারদর ওঠানামা করছে মাঝে মধ্যে।

শেয়ারবার্তা/ কুদ্দুস

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:

ভালো লাগলে শেয়ার করবেন...

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ