1. [email protected] : anjuman : anjuman
  2. [email protected] : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক
  3. [email protected] : শেয়ারবার্তা : nayan শেয়ারবার্তা
তালিকাভুক্ত ৪ বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ, মেয়াদ শেষ আরও ৩টির
রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৭:৫৭ পিএম

তালিকাভুক্ত ৪ বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ, মেয়াদ শেষ আরও ৩টির

  • আপডেট সময় : শনিবার, ৫ জুন, ২০২১
Electricity

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় এরই মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৪টি বিদ্যুৎকেন্দ্র। আরো ৩টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ শেষ হয়ে আসছে। প্রতিটি কেন্দ্রের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য বিপিডিবির কাছে আবেদন করা হলেও এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। এতে বিনিয়োগকারী ও পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে যাওয়া ৪ বিদ্যুৎকেন্দ্র হলো:

১. সামিট পাওয়ার লিমিটেডের শতভাগ মালিকানাধীন নারায়ণগঞ্জের মদনগঞ্জে অবস্থিত ১০২ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রটির মেয়াদ শেষ হয় গত ৩১ মার্চ।

২. ওরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালসের ৯৫ শতাংশ মালিকানাধীন সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান নারায়ণগঞ্জের মেঘনাঘাটে অবস্থিত ১০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার ওরিয়ন পাওয়ার মেঘনাঘাট লিমিটেড বিদ্যুৎকেন্দ্রটির মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ৭ মে।

৩. দেশের প্রথম স্বতন্ত্র বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী (আইপিপি) প্রতিষ্ঠান খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (কেপিসিএল) যশোরের নোয়াপাড়ায় অবস্থিত ৪০ মেগাওয়াট সক্ষমতার কেপিসিএল-৩ বিদ্যুৎকেন্দ্রটির মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ২৮ মে।

৪. এছাড়া খুলনার খালিশপুরে অবস্থিত ১১৫ মেগাওয়াট সক্ষমতার কেপিসিএল-২ বিদ্যুৎকেন্দ্রটির মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ৩১ মে। এগুলো সবই এইচএফও (হেভি ফুয়েল অয়েল) বা ভারী জ্বালানি তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র।

মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর এ চার বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। বিপিডিবির পক্ষ থেকে চিঠি দিয়েও কেন্দ্রগুলোর উৎপাদন বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।

এছাড়া সামিট পাওয়ারের দুটি ও ওরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালসের আরো একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ এ বছর শেষ হতে যাচ্ছে।

এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে অবস্থিত ওরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালসের ৬৭ শতাংশ মালিকানাধীন সাবসিডিয়ারি ১০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার এইচএফও-ভিত্তিক ডাচ্-বাংলা পাওয়ার অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস লিমিটেডের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ২০ জুলাই।

সামিট পাওয়ারের ১৪ মেগাওয়াট সক্ষমতার গ্যাসভিত্তিক সামিট চান্দিনা বিদ্যুৎকেন্দ্রটির মেয়াদ শেষ হচ্ছে এ বছরের ১৪ নভেম্বর। আর ২৪ মেগাওয়াট সক্ষমতা গ্যাসভিত্তিক সামিট মাধবদী বিদ্যুৎকেন্দ্রটির মেয়াদ শেষ হবে আগামী ১৫ ডিসেম্বর।

মদনগঞ্জ ১০২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের ফুয়েলের মান নিয়ে বিপিডিবির সঙ্গে সামিটের বিরোধ চলছে। বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয় সামিট। আর আইনি লড়াই চলাকালেই ২০১৬ সালে পাঁচ বছরের জন্য বিদ্যুৎকেন্দ্রটির মেয়াদ বাড়ায় বিপিডিবি।

সামিট পাওয়ারের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে এ বছরের ১ এপ্রিল থেকেই কেন্দ্রটি থেকে বিদ্যুৎ কেনা বন্ধ রেখেছে বিপিডিবি। ফলে বর্তমানে কেন্দ্রটিতে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। কেন্দ্রের মেয়াদ দ্বিতীয় দফায় আরো পাঁচ বছরের জন্য ২০২৬ সাল পর্যন্ত পর্যন্ত বাড়ানোর আবেদন করা হয়েছে।

এছাড়া সামিট চান্দিনা ও সামিট মাধবদী বিদ্যুৎকেন্দ্র দুটির মেয়াদও আরো পাঁচ বছরের জন্য বাড়াতে বিপিডিবির কাছে আবেদন করা হয়েছে। যদিও বিপিডিবির পক্ষ থেকে এখনো মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি বলে জানান তিনি।

এদিকে, মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় কেপিসিএলের বন্ধ হয়ে যাওয়া দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ আরো পাঁচ বছরের জন্য বাড়াতে বিপিডিবির কাছে আবেদন করেছে কেপিসিএল। যদিও এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে বিপিডিবির পক্ষ থেকে কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি বলে জানান কোম্পানিটির প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) সোহরাব আলী খান। কোম্পানিটি অবশেষে ডিএসইর মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের জানায়, চুক্তির মেয়ার বৃদ্ধি না হওয়ায় কেন্দ্র দুটির উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়েছে।

অপরদিকে, ওরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালসের সাবসিডিয়ারি দুই বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ আরো পাঁচ বছরের জন্য বাড়াতে এরই মধ্যে বিপিডিবির কাছে আবেদন করেছে কোম্পানিটি। তবে বিপিডিবির পক্ষ থেকে কোন এখনো কোন সদুত্তর মিলেনি।

সম্প্রতি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) পক্ষ থেকে তালিকাভুক্ত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনার জন্য অনুরোধ জানিয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিদ্যুৎ বিভাগের সচিবের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠির বক্তব্য অনুযায়ী, তালিকাভুক্ত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো মেয়াদ শেষে বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে কোম্পানির আয় কমে যাচ্ছে, যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে কোম্পানির মুনাফার ওপর। এতে সাধারণ বিনিয়োগকারী ও পুঁজিবাজারের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার শঙ্কাও রয়েছে। তাই বিষয়টি বিবেচনায় নিতে অনুরোধ করে বিএসইসি।

গত সপ্তাহের বুধবার বিএসইসি চেয়ারম্যান সংবাদ মাধ্যমকে জানান, ‘আমরা সরকারের সাথে একটু নেগোসিয়েশন পর্যায়ে আছি। নো ইলেকট্রিসিটি নো পেমেন্ট-এ রকম একটা ব্যবস্থাপনায়। এটা হলে লিস্টেড কোম্পানিগুলো কিছুটা বেনিফিট পাবে। তাদের যতটুকু বিদ্যুৎ সরকার কিনবে ততটুকুর জন্য পেমেন্ট পাবে।’

একইদিন জ্বালানি ও বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সংবাদ মাধ্যমকে জানান, কিছু পকেট এরিয়ায় কয়েকটি কেন্দ্রকে ‘নো ইলেকট্রিসিটি, নো পেমেন্ট’ ভিত্তিকে অনুমোদন দেয়া হবে। তবে অন্যগুলোর বিষয়ে বিবেচনা করা হবে না।

গত বুধবার (২ জুন) বিএসইসি চেয়ারম্যান একটি নিউজ পোর্টালের সঙ্গে সাক্ষাতকারে বলেন, ‘আমরা সরকারের সাথে একটু নেগোসিয়েশন পর্যায়ে আছি। নো ইলেকট্রিসিটি নো পেমেন্ট-এ রকম একটা ব্যবস্থাপনায়। এটা হলে লিস্টেড কোম্পানিগুলো কিছুটা বেনিফিট পাবে। তাদের যতটুকু বিদ্যুৎ সরকার কিনবে ততটুকুর জন্য পেমেন্ট পাবে।’

এর আগে গত ১১ মার্চ, ২০২১ রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ আর না বাড়ানোর সুপারিশ করেছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্যমতে, বর্তমানে দেশে বিদ্যুতের উৎপাদন সক্ষমতা ছাড়িয়েছে সাড়ে ২৪ হাজার মেগাওয়াট। অথচ বিদ্যুৎ ব্যবহার হচ্ছে কেবল ১৩ হাজার মেগাওয়াটের মতো। বাকি বিদ্যুৎ অলস পড়ে থাকছে। ফলে ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর মেয়াদ আর না বাড়াতে মন্ত্রণালয়ের নীতিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে।

এদিকে বিদ্যুতের নীতি-গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, যেসব ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ ফুরিয়েছে, সেগুলোর যৌক্তিক কোনো প্রয়োজনীয়তা না থাকলে আর মেয়াদ বাড়ানো হবে না। এটি সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত।

মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর আবেদনের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেসব ভাড়াভিত্তিক কেন্দ্রগুলো আবেদন করেছে, তাদের বিষয়টি আমরা ক্রিটিক্যালি রিভিউ করছি। তবে এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:

ভালো লাগলে শেয়ার করবেন...

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ