1. [email protected] : anjuman : anjuman
  2. [email protected] : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক
  3. [email protected] : শেয়ারবার্তা : nayan শেয়ারবার্তা
পুঁজিবাজার চাঙা করতে ব্যাংকের বিশেষ তহবিল
রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৭:৩০ পিএম

পুঁজিবাজার চাঙা করতে ব্যাংকের বিশেষ তহবিল

  • আপডেট সময় : শনিবার, ৫ জুন, ২০২১
bank-taka

পুঁজিবাজারের জন্য ৪১ ব্যাংক এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকার তহবিল গঠন করেছে। আর ২০টি ব্যাংক এখনও তহবিল গঠন করেনি। এর মধ্যে ২৭ ব্যাংক বিনিয়োগ করেছে ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। হাতে আছে এখনও ২ হাজার ২০০ কোটি টাকা।

পুঁজিবাজারকে চাঙা করতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো যে বিশেষ তহবিল করেছে, তার একটি বড় অংশ এখনও বিনিয়োগ করা হয়নি।

ব্যাংকগুলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২০০ কোটি টাকা করে তহবিল গঠনের অনুরোধ করলেও সবাই এই পরিমাণ তহবিল করেনি। আর যে তহবিল গঠন হয়েছে, তার মধ্যে বিনিয়োগও হয়নি বেশির ভাগ টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব বলছে, পুঁজিবাজারের জন্য ৪১ ব্যাংক এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকার তহবিল গঠন করেছে। আর ২০টি ব্যাংক এখনও তহবিল গঠন করেনি।

এর মধ্যে ২৭ ব্যাংক বিনিয়োগ করেছে ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। হাতে আছে এখনও ২ হাজার ২০০ কোটি টাকা।

অর্থাৎ ব্যাংকগুলোতে যে পরিমাণের তহবিল গঠন হয়েছে, তার মাত্র ৪০ শতাংশ বিনিয়োগে এসেছে।

শেয়ার কেনার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো অতিমাত্রায় সতর্ক। আর বাংলাদেশ ব্যাংকও এ বিষয়ে কোনো চাপ দিচ্ছে না। কর্মকর্তারা বলছেন, আইন অনুযায়ী পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য তারা কোনো ব্যাংককে বাধ্য করতে পারেন না। এ জন্য ব্যাংকগুলোর বিবেচনার ওপর ছেড়ে দিয়েছেন তারা। তবে পুঁজিবাজার ধীরে ধীরে স্থিতিশীল হচ্ছে। এই অবস্থা স্থায়ী হলে ব্যাংকগুলো নিজেরাই শেয়ার কিনবে।

সূচকের সঙ্গে বাড়ছে তহবিল-বিনিয়োগ
গত দুই মাসে পুঁজিবাজারে সূচক বৃদ্ধির পাশাপাশি বাড়ছে তহবিল ও বিনিয়োগের পরিমাণ।

গত মার্চ পর্যন্ত ২৬টি ব্যাংক ২ হাজার ৯০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠন করে। সে সময় বিনিয়োগ ছিল ১ হাজার ৩৭ কোটি টাকা।

গত বছরের আগস্ট থেকে পুঁজিবাজারে টানা উত্থান চলতে থাকে জানুয়ারি পর্যন্ত। এরপর ৪ এপ্রিল পর্যন্ত বাজার যায় সংশোধনে। ৫ এপ্রিল লকডাউন শুরুর দিন থেকে আবার শুরু হয় উত্থান।

৩১ মার্চ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ছিল ৫ হাজার ৬০২ পয়েন্ট। সেখান থেকে সূচক সাড়ে পাঁচ শ পয়েন্ট বেড়ে এখন হয়েছে ৬ হাজার ৫৩ পয়েন্টে।

শেয়ারের দর বৃদ্ধির এই সময়টিতে গত আড়াই মাসে বিশেষ তহবিলের পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা। আর এ সময়ে বিনিয়োগও বেড়েছে ৩৬৩ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মাসুদ বিশ্বাস বলেন, ‘ব্যাংকগুলোকে একটা সুবিধা দেয়া হয়েছে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য। এটা ব্যাংক ইচ্ছামতো করতে পারবে। ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের পলিসি সাপোর্ট আছে। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সার্কুলারও রয়েছে। কোনো ব্যাংক আমাদের কাছে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের অনুমতি চাইলে আমরা অনুমতি দিই।’ তবে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতেই হবে, বিষয়টি এমন নয়।

মাসুদ বিশ্বাস বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের সব পলিসি মেনেই তারা বিনিয়োগ করেছে এবং করতে পারে। এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে কোনো চাপ দেয়া হয়নি।’

কোন ব্যাংকের কত টাকার তহবিল
সবচেয়ে বেশি ২০০ কোটি টাকার তহবিল করেছে আটটি ব্যাংক। এগুলো হলো সোনালী, জনতা, অগ্রণী, ওয়ান, ইউসিবি, এনসিসিবিএল, ইসলামী ও মার্কেন্টাইল ব্যাংক।

আর এই বিশেষ তহবিল থেকে ১০০ কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ করেছে সোনালী, জনতা, অগ্রণী, আইএফআইসি, ইউসিবি ও রূপালী ব্যাংক।

বিশেষ তহবিল গঠন করেছে এক্সিম, সিটি, রূপালী, পূবালীসহ আরও ১৯ ব্যাংক। তবে সবগুলোর নাম এখন পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, যারা তহবিল গঠন করেছে, তাদের বেশির ভাগই ৬০ থেকে ৭০ কোটি টাকা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করেছে।

যা বলছে ব্যাংকগুলো
অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোহম্মদ শামস-উল ইসলাম বলেন, ‘ঋণ দেয়ায় যেমন ঝুঁকি আছে, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগেও ঝুঁকি আছে। তবে এসব ঝুঁকি নিয়েই বিনিয়োগ করতে হবে।

‘এ ঝুঁকি আমাদের জন্য আশীর্বাদ, মুনাফা নিয়ে আসে। এগুলো নির্ভর করে প্রতিটি ব্যাংকের পোর্টফোলিও ম্যানেজমেন্টের ওপর। এ জন্য সরকারি-বেসরকারি সব ব্যাংককেই নির্দ্বিধায় পুঁজিবাজারে আসা উচিত।’

রূপালী ব্যাংকের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা শওকত জাহান খান বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী মূলধনের ২৫ শতাংশ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করা যাবে। অন্য ব্যাংক কেন বিনিয়োগ করছে না, সেটা আমি বলতে পারব না।’

তবে পুঁজিবাজারে ভালো শেয়ার না বাড়িয়ে কেবল বিনিয়োগ বাড়ালে সেটি ঝুঁকি তৈরি করবে বলে মনে করেন এই ব্যাংকার।

তিনি বলেন, ‘ইস্যু (শেয়ার) না বাড়িয়ে যদি মানি ফ্লো বাড়ানো হয়, সে ক্ষেত্রে খারাপ শেয়ারগুলো অতিমূল্যায়িত হয়ে যাবে। তখন বিনয়োগকারীরা সমস্যায় পড়ে, পরে হতাশায় ভোগে।

‘বাজার অতিমূল্যায়িত হোক, সাধারণ বিনিয়োগকারীরা হতাশাগ্রস্ত হোক– এটা আমরা কখনও চাই না। ২০১০-১১ সালের মতো ঘটনা শেয়ারবাজারে হোক এটা চাই না। এ জন্য যত দ্রুত সম্ভব মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি, সরকারি কোম্পানি বাজারে নিয়ে আসা উচিত।’

বিশেষ তহবিল কবে
২০২০ সালের শুরুতে পুঁজিবাজারের টানা দরপতন সামাল দিতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর জন্য বিশেষ তহবিল গঠনের সুযোগ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ১০ ফেব্রুয়ারি পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য তহবিল গঠন-সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, তফসিলি ব্যাংকগুলো ট্রেজারি বিল ও বন্ড রেপোর মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সর্বোচ্চ ২০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য বিশেষ তহবিল গঠন করতে পারে। ব্যাংকগুলো চাইলে নিজস্ব উৎস থেকেও এমন তহবিল গঠন করতে পারে।

ওই বিশেষ তহবিলের সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ সংশ্লিষ্ট ব্যাংক নিজস্ব পোর্টফোলিওতে ব্যবহার করতে পারবে। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে গঠন করা বিশেষ তহবিল ২০২৫ সাল পর্যন্ত ব্যবহার করতে পারবে ব্যাংক, যা পুঁজিবাজারে ব্যাংক কোম্পানি আইনের বর্ণিত বিনিয়োগ গণনার বাইরে থাকবে।

তহবিলের অর্থ শুধু পুঁজিবাজারের ২১৭টি সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ করা যাবে, যা পুঁজিবাজারে ব্যাংক কোম্পানি আইনের বর্ণিত বিনিয়োগ গণনার বাইরে থাকবে। ব্যাংকের সাবসিডিয়ারি কোম্পানির নিজস্ব নতুন পোর্টফোলিও গঠনের জন্য ঋণ হিসেবে তহবিলের ২০ শতাংশ দেয়া যাবে।

অন্য ব্যাংকের বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাবসিডিয়ারি মার্চেন্ট ব্যাংক বা ব্রোকারেজ হাউসের নিজস্ব নতুন পোর্টফোলিওর জন্য ৩০ শতাংশ এবং অন্যান্য মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউসের নিজস্ব নতুন পোর্টফোলিও গঠনের জন্য তহবিলের ১০ শতাংশ ঋণ হিসেবে দেয়া যাবে।

এই বিশেষ সুবিধায় পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠনের সুযোগ হয়।

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:

ভালো লাগলে শেয়ার করবেন...

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ