1. [email protected] : anjuman : anjuman
  2. [email protected] : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক
  3. [email protected] : শেয়ারবার্তা : nayan শেয়ারবার্তা
বিএসআরএমের দুই প্রতিষ্ঠানের বিক্রি নিম্নমুখী
বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৬:৫৩ পিএম

বিএসআরএমের দুই প্রতিষ্ঠানের বিক্রি নিম্নমুখী

  • আপডেট সময় : রবিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১৯
BSRM

চলমান উন্নয়ন ও অবকাঠামোগত প্রকল্পগুলোর শ্লথগতি এবং বেসরকারি আবাসন প্রকল্পগুলো মুখ থুবড়ে পড়ায় গত চার-পাঁচ মাস ধরে দেশের ইস্পাত খাতের বিক্রি নিম্নমুখী। বাজারে চাহিদার কয়েকগুণ বেশি সরবরাহ রয়েছে এ খাতের পণ্যের। তাছাড়া আন্তর্জাতিক পর্যায়েও ইস্পাতের বাজার নিমম্নমুখী।

এ অবস্থায় দেশের ইস্পাত খাতের শীর্ষ ব্যবসায়ী গ্রুপ বিএসআরএমের দুই প্রতিষ্ঠানের বিক্রি প্রায় ৪০ শতাংশ কমেছে। এ কারণে প্রতিষ্ঠান দুটির পণ্য মজুত বেড়েছে। পাশাপাশি ব্যাংকঋণ নেওয়াও বেড়েছে। পুঁজিবাজারের নিবন্ধিত ইস্পাত খাতের এই প্রতিষ্ঠান দুটি হলো বাংলাদেশ স্টিলস রি-রোলিং মিলস লিমিটেড ও বিএসআরএম স্টিলস লিমিটেড। প্রতিষ্ঠান দুটির চলতি হিসাববর্ষের প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর) আর্থিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে এ দুটি প্রতিষ্ঠানের বিক্রি কমেছে প্রায় এক হাজার ৩১৫ কোটি টাকার। অন্যদিকে মজুদ পণ্য জমেছে ৭২৮ কোটি টাকা। ব্যবসা চালাতে ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণের পরিমাণ বেড়েছে এক হাজার ৫৪ কোটি টাকা। পাশাপাশি অন্যান্য ব্যয়ও বেড়েছে বলে জানা গেছে।

তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, চলতি হিসাববছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে বাংলাদেশ স্টিলস রি-রোলিং মিলস লিমিটেডের মোট বিক্রি থেকে প্রাপ্ত আয় ছিল এক হাজার ২৭৩ কোটি টাকা, যা গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের একই সময়ে ছিল দুই হাজার পাঁচ কোটি টাকা। অর্থাৎ আগের বছরের তুলনায় বিক্রি ৭৩২ কোটি টাকা বা ৩৭ শতাংশ কমেছে। এ সময়ে প্রতিষ্ঠানটির নিট মুনাফা হয়েছে ৩৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা, যা আগের হিসাববর্ষে ছিল ৪২ কোটি ৯০ লাখ টাকা। ফলে আগের চেয়ে নিট মুনাফা কমেছে ৯ কোটি ১৯ লাখ টাকা। আর এ তিন মাসে প্রতিষ্ঠানটির স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি ঋণ বেড়েছে ৩৮২ কোটি ২৮ লাখ টাকা। এ সময়ে প্রতিষ্ঠানটির মোট ঋণের পরিমাণ ছিল চার হাজার ৬৯৮ কোটি ৫৩ লাখ টাকা, যা গত ২০১৮-১৯ হিসাববর্ষ শেষে ছিল চার হাজার ৩১৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা। এ সময়ে প্রতিষ্ঠানটির মজুদ পণ্য বেড়েছে ৫০২ কোটি টাকার।

একই প্রান্তিকে একই গ্রুপের আরেকটি প্রতিষ্ঠান বিএসআরএম স্টিলস লিমিটেডের বিক্রি থেকে প্রাপ্ত আয় ছিল ৮৩০ কোটি ৮০ লাখ, যা আগের হিসাববছরের একই প্রান্তিকে ছিল এক হাজার ৪১৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতিষ্ঠানটির বিক্রি ৫৮৩ কোটি টাকা বা ৪১ শতাংশেরও বেশি কমেছে। এ সময়ে নিট মুনাফা হয়েছে ১৪ কোটি ২২ লাখ টাকা, যা আগের হিসাববর্ষের প্রথম প্রান্তিকে ছিল ৪৫ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। অর্থাৎ নিট মুনাফা কমেছে ৩১ কোটি ৭১ লাখ টাকা। এ প্রতিষ্ঠানের বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনায় ঋণ বেড়েছে ৬৭১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। অর্থাৎ চলতি হিসাববছরের প্রথম প্রান্তিক শেষে সব ধরনের ঋণের পরিমাণ ছিল চার হাজার ২১৬ কোটি ৫২ লাখ টাকা; যা গত ২০১৮-১৯ অর্থবছর শেষে ছিল তিন হাজার ৫৪৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। আর পণ্যের মজুত বেড়েছে ২২৬ কোট টাকার।

প্রতিষ্ঠান দুটির ব্যবসায়িক তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, আলোচিত সময়ে প্রতিষ্ঠান দুটির মোট বিক্রি ছিল দুই হাজার ১০৩ কোটি টাকা। আগের অর্থবছরের একই সময়ের মোট বিক্রি ছিল তিন হাজার ৪১৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ আগের বছরের তুলনায় বিক্রি প্রায় এক হাজার ৩১৫ কোটি টাকা বা ৪০ শতাংশ কমেছে। এছাড়া প্রতিষ্ঠান দুটির মজুত পণ্য জমেছে ৭২৮ কোটি টাকার। ঋণ গ্রহণের পরিমাণ বেড়েছে এক হাজার ৫৪ কোটি টাকা। পাশাপাশি অন্যান্য ব্যয়ও বেড়েছে।

এ বিষয়ে বিএসআরএম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী হোসাইন আকবার আলী বলেন, ‘মূলত বর্ষার কারণে বিক্রি অনেক কম হয়েছে। এ সময়ে বন্যাসহ ঝূঁর্ণিঝড় ছিল। পাশাপাশি সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ বন্ধ ছিল। বিক্রি কম হওয়ায় মজুতও বেড়েছে।’

তিনি জানান, প্রায় ৮০০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি মেল্টিং কারখানার কাজ করছে বিএসআরএম। এ কারণে তাদের ব্যাংকঋণ বাড়ছে।

এদিকে গ্রুপটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘এখন বিক্রি ভালো। আশা করছি, মজুত ও ঋণ দুটোই কমে আসবে।’

দেশের ইস্পাত খাতসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ খাতে আরেকটি মন্দার আভাস দিয়েছেন পৃথিবীর বড় বড় গবেষণা সংস্থাগুলো। আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ফিচ সলিউশন ম্যাক্রো রিসার্চ চলতি বছরের ইস্পাতের বৈশ্বিক মূল্য পূর্বাভাসে বলেছে, এবার পণ্যটির দাম আরও কমে আসবে এবং দরপতনের ধারা আগামী কয়েক বছর অব্যাহত থাকতে পারে। মূলত যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের বাণিজ্যযুদ্ধের জেরে ক্রমেই শ্লথ হয়ে আসা বৈশ্বিক অর্থনীতি এর পেছনে প্রভাবক হিসেবে কাজ করছে। এ সময়ে বিশ্বব্যাপী পণ্যটির উৎপাদন বাড়বে। তবে দুর্বল অর্থনীতি ও নির্মাণশিল্পে মন্দার কারণে ধাতুটির ব্যবহার কমে আসবে। ফলে চাহিদা অনুপাতে বিশ্ববাজারে ইস্পাতের সরবরাহ বেড়ে যাবে, যা পণ্যটির মূল্য কমিয়ে আনতে পারে।

শেয়ারবার্তা/ সাইফুল ইসলাম

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:

ভালো লাগলে শেয়ার করবেন...

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ