1. [email protected] : anjuman : anjuman
  2. [email protected] : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক
  3. [email protected] : শেয়ারবার্তা : nayan শেয়ারবার্তা
একশ টাকা আনতে ২৬২ টাকা খরচ করেছে আকিজ তাকাফুল লাইফ
বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১০:২৬ পিএম

একশ টাকা আনতে ২৬২ টাকা খরচ করেছে আকিজ তাকাফুল লাইফ

  • আপডেট সময় : সোমবার, ৩০ মে, ২০২২
akij-takaful-insurence-sharebarta

একশ টাকা আয় করতে ২৬২ টাকা খরচ করেছে নতুন প্রজন্মের জীবন বিমা কোম্পানি আকিজ তাকাফুল লাইফ ইন্স্যুরেন্স। ব্যবসা শুরুর প্রথম বছরেই এমন অস্বাভাবিক ব্যয় করেছে জীবন বিমা কোম্পানিটি। আবার ব্যয় করা অর্থের সিংহভাগই পরোক্ষ ব্যয়।

জীবন বিমা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জীবন বিমা কোম্পানির ব্যবসার শুরুতে ব্যয় একটু বেশি থাকে। তবে আয়ের তুলনায় আকিজ তাকাফুল লাইফের যে ব্যয় হয়েছে, তা অনেক বেশি। দ্রুত আয় বাড়ানো এবং ব্যয় কমাতে না পারলে ভবিষ্যতে কোম্পানিটি সমস্যায় পড়বে। একই সঙ্গে পলিসির মেয়াদ শেষে গ্রাহকদের টাকা ফেরত পাওয়াও অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে যাবে।

অন্যদিকে কোম্পানিটির পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, ব্যবসা শুরুর প্রথম বছর হওয়ায় ব্যয় বেশি হয়েছে। আগামীতে ব্যয় আইনি সীমার মধ্যে থাকবে। এমনকি ২০২২ সালেই ব্যবস্থাপনা খাতে ব্যয় হবে আইনি সীমার নিচে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) ২০২১ সালের মে মাসে বিচল্যান্ড ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড নামে একটি জীবন বিমা কোম্পানির অনুমোদন দেয়। পরে কোম্পানিটির নাম বদলে হয় আকিজ তাকাফুল লাইফ ইন্স্যুরেন্স।

ব্যবসা শুরুর প্রথম বছর বা ২০২১ সালে আকিজ তাকাফুল লাইফ প্রিমিয়াম আয় করেছে ৫৩ লাখ ২৪ হাজার ৫৭৩ টাকা। এর মধ্যে জুলাই-সেপ্টেম্বর এই তিন মাসে আয় হয়েছে ৫১ হাজার ৮৫০ টাকা। বাকি ৫২ লাখ ৭২ হাজার ৭২৩ টাকা আয় হয়েছে অক্টোবর-ডিসেম্বর এই তিন মাসে।

এ আয়ের বিপরীতে কোম্পানিটি ব্যবস্থাপনা খাতে ব্যয় করেছে ১ কোটি ৩৯ লাখ ৪৫ হাজার ৫৩৮ টাকা। এর মধ্যে জুলাই-সেপ্টেম্বর এই তিন মাসে ব্যয় করেছে ১২ লাখ ৬৩ হাজার ৪০৪ টাকা। অক্টোবর-ডিসেম্বর এই তিন মাসে ব্যয় করেছে ১ কোটি ২৬ লাখ ৮২ হাজার ১৩৪ টাকা।

অর্থাৎ আয়ের তুলনায় ব্যয় বেশি হয়েছে ২৬২ শতাংশ। অন্যভাবে বলা যায়, কোম্পানিটি একশ টাকা আয় করতে ২৬২ টাকা খরচ করেছে। এমন বেপরোয়া খরচ করলেও বিমা আইন অনুযায়ী, বছরটিতে ব্যবস্থাপনা খাতে কোম্পানিটি সর্বোচ্চ ৩৪ লাখ ১০ হাজার টাকা খরচ করতে পারতো। এ হিসাবে আইন লঙ্ঘন করে প্রতিষ্ঠানটি ১ কোটি ৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা অতিরিক্ত ব্যয় করেছে।

এ ব্যয়ের সিংহভাগ হয়েছে পরোক্ষ খাতে। কোম্পানিটি ব্যবস্থাপনা খাতে যে অর্থ খরচ করেছে তার মধ্যে ১ কোটি ১৬ লাখ ৩০ হাজার টাকাই পরোক্ষ ব্যয়। এর মধ্যে অফিস ভাড়া ১১ লাখ ৩০ হাজার টাকা, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ৪৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা, গাড়ির জ্বালানি ও অবচয় ২ হাজার টাকা, মনিহারি ব্যয় ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা এবং অন্যান্য পরোক্ষ ব্যয় ৫৮ লাখ ৭০ হাজার টাকা।

অন্যদিকে প্রত্যক্ষ ব্যয় হয়েছে ২৩ লাখ ১০ হাজার টাকা। এর মধ্যে কমিশন ব্যয় ১২ লাখ টাকা। এছাড়া উন্নয়ন কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতায় ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং অন্যান্য প্রত্যক্ষ ব্যয় হিসেবে ৬০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে।

সীমিত আয়ের বিপরীতে মাত্রাতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করার কারণে এই জীবন বিমা কোম্পানিটির জীবন তহবিল (লাইফ ফান্ড) ঋণাত্মক হয়ে পড়েছে। ২০২১ সাল শেষে জীবন তহবিল দাঁড়িয়েছে ঋণাত্মক ৬ লাখ ২০ হাজার টাকা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক জীবন বিমা কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) বলেন, ব্যবসা শুরুর প্রথম বছর জীবন বিমা কোম্পানির ব্যয় বেশি হতে পারে। কিন্তু সেই ব্যয় আড়াইশ শতাংশ বেশি হওয়া স্বাভাবিক নয়। কোম্পানিটির দ্রুত ব্যয় নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করতে হবে। সেই সঙ্গে আয় বাড়ানোর পদক্ষেপ নিতে হবে। তা না হলে টিকে থাকা কঠিন হবে। মেয়াদ শেষে পলিসি গ্রাহকরাও তাদের টাকা ঠিক মতো ফেরত পাবেন না।

তারা আরও বলেন, নিয়ম মেনে না চলার কারণে বেশ কয়েকটি জীবন বিমা কোম্পানি গ্রাহকদের টাকা ঠিক মতো শোধ করতে পারছে না। ফলে বিমা খাতে এক ধরনের ইমেজ সংকট তৈরি হয়েছে। অনেকের ধারণা, বিমা মানেই এক ধরনের প্রতারণা। বিমা খাতকে এই ইমেজ সংকট থেকে বের করে আনতে হবে। এখন নতুন যে বিমা কোম্পানিগুলো ব্যবসা করছে, তাদের আইন মেনে চলতে বাধ্য করতে হবে। এটা করা গেলে বিমা খাতের ওপর মানুষের আস্থা বাড়বে, যা দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

যোগাযোগ করা হলে আকিজ তাকাফুল লাইফের সিইও মোহাম্মদ আলমগীর চৌধুরী বলেন, ২০২১ সালে আমরা ব্যবসা করেছি মাত্র দেড় মাস। নভেম্বর মাসের ১৫ তারিখ থেকে ব্যবসা শুরু করেছি। এর আগে ব্যবসা শুরু করতে আমাদের বিভিন্ন খরচ হয়েছে। এ কারণে খরচ একটু বেশি হবে এটাই স্বাভাবিক।

তিনি বলেন, ২০২১ সালে ব্যয় বেশি হলেও আগামীতে আমাদের ব্যয় আইনি সীমার নিচে থাকবে। আইনে ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের যে সীমা আছে ২০২২ সালে তার থেকে কম ব্যয় হবে। এরই মধ্যে আমরা ব্যয় কমিয়ে নিয়ে এসেছি। প্রিমিয়াম আয়ের ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত ব্যয় করার অনুমোদন থাকলেও চলতি বছরের চার মাসে আমরা ব্যয় করেছি ৭৫ শতাংশ।

ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের অধিকাংশ পরোক্ষ খাতে হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই কোম্পানিটি আকিজ গ্রুপ কিনে নিয়েছে। আকিজ গ্রুপ কেনার পর নাম পরিবর্তনসহ অন্যান্য কিছু খরচ হয়েছে। এ কারণেই খরচ একটু বেশি হয়েছে।

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:

ভালো লাগলে শেয়ার করবেন...

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ