1. [email protected] : anjuman : anjuman
  2. [email protected] : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক
  3. [email protected] : শেয়ারবার্তা : nayan শেয়ারবার্তা
বাড়ছে পুঁজিবাজারে দেশি কোম্পানি ও বহুজাতিক কোম্পানির ব্যবধান
সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ০৯:৫৯ পিএম

বাড়ছে পুঁজিবাজারে দেশি কোম্পানি ও বহুজাতিক কোম্পানির ব্যবধান

  • আপডেট সময় : মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৯
DSE CSE

পুঁজিবাজারে একটার পর একটা দেশি কোম্পানির তালিকাভুক্তি ঘটলেও কার্যত এর সুফল পাচ্ছেন না সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। উল্টো এসব কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে প্রতারিত হচ্ছেন তারা। লভ্যাংশ প্রদান, শেয়ারপ্রতি ইপিএস, শেয়ারপ্রতি এনএভিপিএস সব দিক দিয়েই বহুজাতিক কোম্পানির তুলনায় এসব কোম্পানি পিছিয়ে আছে। সম্প্রতি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) থেকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, শীর্ষ ১০ ইপিএসধারী কোম্পানির মধ্যে শীর্ষ ছয়টিই বহুজাতিক কোম্পানি। এই তালিকায় প্রথমে রয়েছে বাটা শু। সর্বশেষ আর্থিক বছরে এই প্রতিষ্ঠানটির ইপিএস দাঁড়িয়েছে ৭২ টাকা ৭৯ পয়সা। যদিও চলতি আর্থিক বছরের তৃতীয় প্রান্তিক শেষে এ কোম্পানিটির ইপিএস কমে গেছে।

পরের অবস্থানে থাকা কোম্পানি রেকিট বেনকিজারের ইপিএস দাঁড়িয়েছে ৭০ টাকা ২২ পয়সা। এছাড়া লিন্ডে বিডির ৬৫ টাকা ৯৫ পয়সা, ম্যারিকোর ৬৪ টাকা ২৩ পয়সা, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর ইপিএস হয়েছে ৫৫ টাকা ৬২ পয়সা ও বার্জার পেইন্টসের ইপিএস ৪৪ টাকা ৪১ পয়সা।

এই তালিকায় থাকা বাকি চারটি কোম্পানি হলো রেনাটা, ইস্টার্ন লুব্রিক্যান্টস, পদ্মা অয়েল ও মেঘনা পেট্রোলিয়াম।

বাজারসংশ্লিষ্টরা বলেন, দেশি কোম্পানিগুলো পিছিয়ে থাকার প্রধান কারণ সুশাসনের অভাব। বেশিরভাগ কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার পর প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে কাজ করে না। এসব কোম্পানিতে কারসাজির ঘটনাও বেশি শোনা যায়। কিন্তু বহুজাতিক কোম্পানির বেলায় এর উল্টো পরিস্থিতি দেখা যায়। বেশিরভাগ বহুজাতিক কোম্পানিতে সুশাসন থাকার পাশাপাশি ধারাবাহিকভাবে আর্থিক অবস্থার উন্নতি পরিলক্ষিত হয়। এসব কোম্পানির লভ্যাংশ প্রদানের হারও বেশি। সেজন্য পুঁজিবাজারে এ ধরনের কোম্পানির তালিকাভুক্তির বিকল্প নেই।

রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসে (আরজেএসসি) নিবন্ধিত বহুজাতিক কোম্পানির সংখ্যা হচ্ছে ৩৫৫টি। এর মধ্যে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত রয়েছে মাত্র ১১টি। এগুলো হচ্ছে-বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ, গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন বাংলাদেশ, ব্রিটিশ-আমেরিকান টোব্যাকো, গ্রামীণফোন, ম্যারিকো বাংলাদেশ, লিন্ডে বিডি, রেকিট বেনকিজার বাংলাদেশ, হাইডেলবার্গ সিমেন্ট, লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট লিমিটেড, সিঙ্গার বাংলাদেশ ও বাটা শু।

এদিকে গত ১০ বছরে বাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানির সংখ্যা বাড়লেও পুঁজিবাজারে আসেনি কোনো বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান। সর্বশেষ ২০০৯ সালে তালিকাভুক্ত হয় গ্রামীণফোন। বিষয়টি পুঁজিবাজারের জন্য ভালো দিক নয় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নানা ধরনের চেষ্টা সত্ত্বেও বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে আনা সম্ভব হচ্ছে না। অথচ কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে বছরের পর বছর ব্যবসা পরিচালনা করে যাচ্ছে। কিন্তু পুঁজিবাজারে না আসায় এসব কোম্পানির মুনাফার কোনো সুফল পাচ্ছেন না দেশবাসী।

গত তিন বছর আগে এসব কোম্পানি বাজারে আনার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে কিছু প্রস্তাব দেয় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড একচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এর মধ্যে অন্যতম ছিল বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে আগ্রহী করে তুলতে বাধ্যবাধ্যকতা আরোপের পাশাপাশি কর হ্রাসসহ একাধিক সুযোগ-সুবিধা প্রদান। এক্ষেত্রে তালিকাভুক্ত বহুজাতিক কোম্পানির করহার অতালিকাভুক্ত বিদেশি কোম্পানির চেয়ে ১৫ শতাংশ কম নির্ধারণ করা যেতে পারে বলে প্রস্তাব করা হয়। একই সঙ্গে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত না হলে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর লভ্যাংশের ওপর প্রয়োজনে বর্ধিত হারে করারোপসহ প্রাপ্ত বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা কাটছাঁট করার প্রস্তাব করে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। কিন্তু এরপর আর কোনো অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না।

সূত্রমতে, বাংলাদেশে ব্যবসা করার জন্য কোম্পানিগুলোকে আরজেএসসি থেকে নিবন্ধন সনদ নিতে হয়। এ নিবন্ধনের সময় শর্তারোপ করে বিদেশি কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্তির ব্যাপারে বাধ্য করা যেতে পারে বলেও প্রস্তাব করেছিল বিএসইসি। এছাড়া কোম্পানির মূলধনের একটি নির্দিষ্ট অংশ পুঁজিবাজার থেকে পাবলিক অফারের মাধ্যমে সংগ্রহের শর্ত আরোপ করা যেতে পারে। এছাড়া বহুজাতিক কোম্পানিগুলো কোনো না কোনো মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সঙ্গে সম্পৃক্ত, এগুলোর মাধ্যমে কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্তির ক্ষেত্রে বাধ্য করার সুপারিশ করে বিএসইসি।

এ প্রসঙ্গে ডিএসই’র পরিচালক রকিবুর রহমান বলেন, ‘আমি মনে করি এসব কোম্পানির প্রতি সরকারের কঠিন হওয়া উচিত। তাদের ওপর করের পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়াসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বন্ধ করে দিলে তারা পুঁজিবাজারে আসবে। কঠিন সিদ্ধান্ত না নিলে তারা কিছুতেই পুঁজিবাজারমুখী হবেন না। পাশাপাশি দেশি কোম্পানিতে সুশাসন আরও বাড়াতে হবে। দেশেও অনেক ভালো ভালো কোম্পানি রয়েছে। সেগুলো পুঁজিবাজারে এলে বাজারের পাশাপাশি বিনিয়োগকারীরাও উপকৃত হবেন।’

একই প্রসঙ্গে পুঁজিবাজার-বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, ‘যেসব বহুজাতিক কোম্পানি আমাদের দেশে ব্যবসা করছে, তাদের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার জন্য সরকারসহ সবার পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। কারণ পুঁজিবাজারে ভালো শেয়ারের জোগান দিতে এসব কোম্পানির বিকল্প নেই।’

পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশীয় মৌল ভিত্তিসম্পন্ন তালিকাভুক্ত কোম্পানির সংখ্যা কম হওয়ায় বিদেশি বিনিয়োগকারীরা হাতেগোনা কয়েকটি কোম্পানিতেই সাধারণত বিনিয়োগ করেন। অন্যদিকে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর মৌলভিত্তি ভালো হওয়ায় এ কোম্পানিগুলো ঘিরে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ অনেক বেশি। এ কারণে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো তালিকাভুক্ত হলে পুঁজিবাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ ও অংশগ্রহণ বাড়বে। ইতিবাচক হবে পুঁজিবাজারের গতি-প্রকৃতি।

শেয়ারবার্তা / হামিদ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:

ভালো লাগলে শেয়ার করবেন...

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ