শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত আলোচিত কোম্পানি সোনালী পেপারের শেয়ার দাম কারসাজির জন্য বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে ২ কোটি ২৬ কোটি টাকা জরিমানা করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
কমিশনের এপ্রিল মাসের এনফোর্সমেন্ট অ্যাকশন রিপোর্ট অনুসারে, পর পর দুই পর্যায়ে সোনালী পেপারের শেয়ার সমন্বিত কারসাজির জন্য সাকিব আল হাসানসহ ১৩ জনকে মোট ২৯ কোটি টাকা জরিমানা করেছে বিএসইসি।
জরিমানার তালিকায় আরও রয়েছেন—আবুল খায়ের হিরু, কাজী সাদিয়া হাসান, আবুল কালাম মাতবর, ডিআইটি কো-অপারেটিভ, কাজী ফুরিদ হাসান, কাজী ফুয়াদ হাসান, কনিকা আফরোজ, সাজেদ মাতবর, মোহাম্মদ বাশার, মোনার্ক হোল্ডিংস, মোনার্ক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টস, সফটভিয়ন এবং জাভেদ এ মতিন।
শেয়ার কারসাজি ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ২৮ অক্টোবরের মধ্যে এবং একই বছরের ১ ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে সোনালী পেপারের শেয়ারের দাম ১২৬ শতাংশ বেড়ে ৯৫৭ টাকা ৭০ পয়সায় তোলা হয়। সিন্ডিকেটটি ৩৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকা রিয়েলাইজড মুনাফা অর্জন করেছে বলে জানা গেছে এবং অতিরিক্ত ৫৫ কোটি টাকা আন-রিয়ালাইজড মুনাফা করেছে।
বিএসইসির তদন্তে প্রমাণ মিলেছে, একাধিক ব্যক্তি সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন করে শেয়ারমূল্য কৃত্রিমভাবে বাড়াতে একটি সিন্ডিকেট গঠন করেছিল।
কমিশনে জমা দেওয়া এক লিখিত বিবৃতিতে আবুল খায়ের হিরু সাকিব আল হাসানের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, “এই অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। এটি ইচ্ছাকৃত ছিল না, বরং অজ্ঞতার কারণে হয়েছে। আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, ভবিষ্যতে শেয়ার লেনদেনের ক্ষেত্রে আমি আরও সতর্ক থাকব।”
গত এপ্রিল মাসে শেয়ারবাজারে কারসাজির ঘটনায় চারটি কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে বিএসইসি। এশিয়া ইন্স্যুরেন্স, সোনালী পেপার, সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স ও জেমিনি সি ফুড—এই চার কোম্পানির শেয়ারদরের কৃত্রিম বৃদ্ধির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ২৪ জনকে মোট ৫৪ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এর মধ্যে, সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার কারসাজির দায়ে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি সায়াদুর রহমান ও তার সহযোগীদের ১ কোটি ৯৭ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একই অপরাধে নূরজাহান বেগম ও তার সহযোগীদের ওপর ৭৬ লাখ টাকার জরিমানা আরোপ করা হয়।
জেমিনি সি ফুডের শেয়ার কারসাজির জন্য পাঁচজনকে মোট ৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আর এশিয়া ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারমূল্য কৃত্রিমভাবে বাড়ানোর দায়ে আবুল খায়ের হিরু ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত ১৯ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে।