পুঁজিবাজারের উন্নয়নে প্রধান উপদেষ্টা ড মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশনা অনুসরণে সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানিসমূহের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির বিষয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে সরকারি মালিকানাধীন লাভজনক মৌল ভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানিসমূহকে পুঁজিবাজারে সরাসরি তালিকাভুক্তির বিষয়ে বিস্তর আলোচনা হয়।
আজ রবিবার (৩ আগস্ট) বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানান হয়েছে, গত ৩১ জুলাই তারিখে অর্থ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত উক্ত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ ওবায়দুর রহমান, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক ও অতিরিক্ত সচিব মোঃ সাঈদ কুতুব, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোঃ জিয়াউল হক, বিদুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোঃ সবুর হোসেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্মসচিব ড. দেলোয়ার হোসেন, বিএসইসির পরিচালক মোঃ আবুল কালাম, পেট্রোবাংলার পরিচালক মোঃ শোয়েব, ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিরঞ্জন চন্দ্র দেবনাথ, আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিএমবিএ সভাপতি মাজেদা খাতুনসহ আরও অনেকে।
বৈঠকে সরকারি মালিকানাধীন লাভজনক মৌল ভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানিসমূহকে পুঁজিবাজারে সরাসরি তালিকাভুক্তির বিষয়ে বিস্তর আলোচনা হয়। পাশাপাশি, যেসব বিদেশী বা বহুজাতিক কোম্পানিতে সরকারের মালিকানা রয়েছে, সেগুলোকেও তালিকাভুক্তির মাধ্যমে দ্রুত পুঁজিবাজারে নিয়ে আসার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু কোম্পানির তালিকা তৈরি করা হয়েছে, যেমন: ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেড, কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো), সাইনোভিয়া (সাবেক স্যানোফি) বাংলাদেশ লিমিটেড, নোভাস্টিস (বাংলাদেশ) লিমিটেড, সিনজেন্টা (বাংলাদেশ) লিমিটেড, নেসলে বাংলাদেশ পিএলসি, পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড, নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড, বি-আর পাওয়ারজেন লিমিটেড, সিলেট গ্যাস ফিল্ডস্ কোম্পানি লিমিটেড, বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড, জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড, কর্ণফুলী গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড, সাধারণ বীমা কর্পোরেশন এবং জীবন বীমা কর্পোরেশন।
আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, “পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তি কোম্পানিসমূহের সুশাসন বৃদ্ধি করবে। কোম্পানিসমূহের স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা বৃদ্ধি করবে। একইসাথে কোম্পানিগুলোর ভ্যালুয়েশন তথা বাজারমূল্যও পাওয়া যাবে। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তি কোম্পানিসমূহের জন্য যেমন ইতিবাচক ফলাফল আনবে, তেমনি দেশের পুঁজিবাজারের জন্যও সুফল বয়ে আনবে।” তিনি সকল অংশীজনকে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনা বাস্তবায়নে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ১১ মে ২০২৫ তারিখে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় পুঁজিবাজারের সঠিক অবস্থা পর্যালোচনা এবং উন্নয়ন নিয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে মাননীয় অর্থ উপদেষ্টা, বিএসইসি চেয়ারম্যান ও অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে সরকারি ও বিদেশি মালিকানাধীন কোম্পানিসমূহের তালিকাভুক্তির বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
এনিয়ে বিএসইসি ইতোমধ্যেই প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছে এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে সমন্বয়ের ভিত্তিতে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।