মার্জিন ঋণের খসড়া নীতিমালা নিয়ে নিজেদের আপত্তি জানাতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)-এর সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসতে চান শেয়ারবাজারের অংশীজনরা। বিশেষ করে ব্রোকার-ডিলার ও মার্চেন্ট ব্যাংকাররা বিষয়টি নিয়ে কমিশনের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করতে আগ্রহী।
ডিএসই ব্রোকারদের সভারোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ডিএসই ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) শীর্ষ ৩০ ব্রোকার একত্রিত হয়ে এই নীতিমালার ওপর নিজেদের মতামত তুলে ধরেন। বৈঠকে উপস্থিতরা মনে করেন, খসড়ায় এমন কিছু প্রস্তাব আছে যা কার্যকর হলে বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে এবং সেগুলো সংশোধন জরুরি।
ডিবিএ সভাপতির মতামতএ বিষয়ে ডিবিএ সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে মার্জিন নীতিমালা সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছি, তাই এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। তবে খসড়ায় এমন কিছু বিষয় রয়েছে, যেগুলো নিয়ে আলোচনা না হলে বাস্তবায়নে সমস্যা দেখা দিতে পারে।” তিনি জানান, শুধু ব্রোকার নয়, মার্জিন ঋণ প্রদানকারী মার্চেন্ট ব্যাংকাররাও আলোচনার পক্ষে রয়েছেন।
বিএসইসি’র আহ্বানউল্লেখ্য, সম্প্রতি বিএসইসি নতুন “মার্জিন বিধিমালা (রহিত), ২০২৫”-এর খসড়া প্রকাশ করেছে। কমিশন আগামী ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বাজারের অংশীজনদের মতামত দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
ব্রোকারদের আপত্তির তালিকা
ডিএসই’র বৈঠকে ব্রোকার-ডিলাররা খসড়া নীতিমালার এক ডজনেরও বেশি বিষয়ে আপত্তি তোলেন। এর মধ্যে প্রধান কয়েকটি হলো:
◉ পাঁচ দিনে ফোর্সড সেল: বর্তমানে প্রস্তাব রয়েছে, কোনো ‘এ’ ক্যাটাগরির শেয়ার নন-কমপ্লায়েন্সের কারণে যদি ‘বি’ বা ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে নেমে যায়, তবে তা পাঁচ দিনের মধ্যে বিক্রি করতে হবে। ব্রোকারদের দাবি, এত অল্প সময়ে বিক্রি করা অবাস্তব এবং এতে বাজারে চাপ তৈরি হবে।
◉ অবসরপ্রাপ্তদের অযোগ্য ঘোষণা: খসড়ায় বলা হয়েছে, অবসরপ্রাপ্ত বিনিয়োগকারীরা মার্জিন ঋণ নিতে পারবেন না। ব্রোকাররা মনে করেন, এই শর্ত শিথিল করা উচিত।
◉ বিনিয়োগের ন্যূনতম সীমা: নীতিমালায় শর্ত দেওয়া হয়েছে, গত এক বছরে গড়ে অন্তত ৫ লাখ টাকা বিনিয়োগ থাকলেই মার্জিন ঋণ পাওয়া যাবে। কিন্তু ব্রোকারদের মতে, এই সীমা ৩০ লাখ টাকা করা প্রয়োজন।
খসড়ার প্রস্তাবিত বিধান
খসড়া অনুযায়ী, ছাত্র, গৃহিণী এবং যাদের নিয়মিত আয় নেই—এমন অবসরপ্রাপ্ত বিনিয়োগকারীরা মার্জিন ঋণ পাবেন না। কমিশনের ভাষ্য, সীমিত আর্থিক সক্ষমতার কারণে ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি এড়াতে এবং বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।